গোবরা স্কুলে বাড়তি ফি নেওয়ায় বিক্ষোভ অভিভাবকদের, সরকারি নির্ধারিত ২৪০ টাকা ফি নেওয়ার কথা অবশেষে ঘোষণা করলেন গোবরা ইন্দ্র নারায়ণ ক্ষেত্র মোহন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক। কিছুদিন ধরেই অভিভাবক মহলে ক্ষোভ বিক্ষোভ তৈরি হচ্ছিল বিদ্যালয়ের তরফ থেকে বাড়তি ফি নেওয়া হচ্ছে। বিদ্যালয়ের তরফ থেকে 490 টাকা ফি ও সাথে সরস্বতী পুজোর জন্য 100 টাকা আলাদা ফি ধার্য করা হয়। এখানেই শুরু হয় বিক্ষোভ। কিছু অভিভাবক আজ বিদ্যালয়ের গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন এত পরিমাণ ফি না দিতে পারার জন্য। তাদের দাবি সরকারি নির্ধারিত ২৪০ টাকার বেশি তারা দিতে পারবেন না। প্রান্তিক এলাকার একটি বিদ্যালয়ে যেখানে বেশিরভাগ নিম্ন মধ্যবিত্ত ও অভাবী ঘরের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করে সেই জায়গায় বিদ্যালয়ের তরফ থেকে এমন বাড়তি ফি ধার্য করে দেওয়া কিছু অভিভাবকের কাছে বাড়তি চাপ হয়ে যায়। আজ বিদ্যালয়ের শুরু হওয়ার পর কিছু অভিভাবক অভিভাবিকা জড়ো হয়ে আন্দোলন করে। কিছু অভিভাবক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সাথে আলোচনায় বসলেও সমাধানের সূত্র বের হয়নি। পরবর্তী সময়ে আন্দোলন আরো জোরালো হয়।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও ম্যানেজিং কমিটি বসে পুনরায় সমস্যা সমাধানের জন্য আলোচনায় বসে। শেষ পর্যন্ত অভিভাবক অভিভাবিকা দের দাবি মেনে সরকার নির্ধারিত ২৪০ টাকা ফি রাখার সিদ্ধান্ত করা হয়। সাথে সরস্বতী পুজোর জন্য আলাদা ফি আগের মতই থাকার কথা ঘোষণা করেন। সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে প্রধান শিক্ষক বলেন আমরা বাড়তি টাকা নিয়েছিলাম বিদ্যালয়ের শিক্ষক অভাব থাকার দরুণ কিছু বাড়তি শিক্ষক নিয়োগ করতে হয়েছে। তাদের কিছু সম্মানিত দেওয়ার জন্য আমরা অভিভাবক অভিভাবিকা দের সাথে আলোচনা করেই এই বাড়তি ফি নিয়েছিলাম। আজ কিছু সংখ্যক অভিভাবক এই বাড়তি ফি দিতে অস্বীকার করায় আমরা এই সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটলাম। সরকার নির্ধারিত ২৪০ টাকাই আমরা এবার থেকে নেব। যেসব ছাত্রছাত্রীরা বাড়তি ভর্তি ফি জমা দিয়েছে তাদের আমরা তা ফেরত দিয়ে দেব। যদিও সরস্বতী পুজোর চাঁদা অপরিবর্তিত থাকছে আলাদাভাবেই।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবক অভিভাবিকা দের এই টানা পড়েন অবশেষে সমাধানের রাস্তা খুঁজে নেয়। অভিভাবক অভিভাবিকা কারা যেমন একদিকে ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থের কথা ভেবে এই আন্দোলনে নেমেছে অন্যদিকে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও ম্যানেজিং কমিটি ও ছাত্র-ছাত্রীদের পঠন পাঠনের সার্বিক উন্নতির কথা ভেবেই এই ফি নিয়েছিল। বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক জানান এই প্রান্তিক বিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা ট্রান্সফার নিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন এমনকি কিছুদিনের মধ্যেই অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা অবসর গ্রহণ করবেন। বিদ্যালয়ে বিপুল পরিমাণে শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাব রয়েছে।
শতবর্ষে পদার্পণ হতে চলা এই গোবরা ইন্দ্রনারায়ণ ক্ষেত্র মোহন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এর পঠন পাঠন আগামী দিনে কেমন করে চলবে এই নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে?
এই সমস্যার সমাধান কবে হবে? একদিকে শিক্ষক নিয়োগ নেই অন্যদিকে রামনগর এলাকার নামী এক বিদ্যালয় আগামী দিনে কোন পথে চলবে সেটাই এখন দেখার।
প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটি উদ্যোগ নিয়েই শিক্ষক নিয়োগ করেছেন। তা তো ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থের কথা ভেবেই। অন্যদিকে বাড়তি ফি দিতেও অপারক অভিভাবক অভিভাবিকারাও। সমস্যা কিন্তু থেকেই গেল। এই সমস্যার সমাধান করবে কে? সরকার নাকি স্কুল কর্তৃপক্ষ।